Functions of Finance - অর্থায়নের কার্যাবলি
অর্থায়ন
ফিন্যান্স বা অর্থায়ন বিষয়টি বর্তমানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় তথা সার্বিক দৈনন্দিন কর্মকান্ডে অর্থ ও অর্থায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের সর্বদা আর্থিক সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হতে হয় । তাই অর্থ সংক্রান্ত বিষয়কে বাদ দিয়ে জীবনের কিছুই চিন্তা করা যায় না ।
অর্থায়নের কার্যাবলিঃ Functions of Finance
অর্থায়নের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কার্য রয়েছে । এসব কাজের বর্ণনা করা হলো –
১। আর্থিক পরিকল্পনা
২। উৎস শণাক্তকরণ
৩। তহবিল সংগ্রহ
৪। মূলধন বাজেটিং সিদ্ধান্ত
৫। স্বল্পমেয়াদি সম্পদ ব্যবস্থাপনা
৬। তহবিল বণ্টন
৭। তহবিল সংরক্ষণ
৮। মুনাফা বণ্টন
আর্থিক পরিকল্পনাঃ Financial Planning
অর্থায়নের প্রথম কাজ হলো আর্থিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা । কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য অর্জনে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সরকারের বিশেষ বিশেষ উদ্দেশ্যে অর্থের প্রয়োজনীয়তার যে পরিকল্পনা করতে হয় তাকে আর্থিক পরিকল্পনা বলে । আর্থিক পরিকল্পনার সময় অর্থের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ, সময় ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করতে হয় । কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, কত সময়ের জন্য প্রয়োজন, এবং কোন কোন খাতে কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তার একচি বিস্তারিত বিবরণকেই আর্থিক পরিকল্পনা বলা হয় ।
উৎস শণাক্তকরণঃ Source Identify
আর্থিক পরিকল্পনা করার পর অর্থায়নের অন্যতম কাজ হলো ওই প্রয়োজনীয় অর্থ কোন কোন উৎস থেকে পাওয়া যেতে পারে তা চিহ্ণিতকরণ । এটা হতে পারে কোনো ব্যক্তি, বন্ধুবান্ধব বা কোনো আত্মীয়স্বজন, কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো বাহ্যিক উৎস হতে । অর্থাৎ প্রয়োজনীয় অর্থ পাওয়া যাবে এমন সম্ভাব্য উৎসসমূহ শণাক্ত করা অর্থায়নের অন্যতম কাজ ।
তহবিল সংগ্রহঃ Fund Collection
শণাক্তকৃত উৎস হতে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করা অর্থায়নের ৩য় গুরুত্বপূর্ণ কাজ । তহবিল সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নিয়ম নীতি, শর্ত ও সময় বিবেচনা করতে হয় । এই সব নিয়ম কানুন ও শর্ত বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় অর্থ এক বা একাধিক উৎস হতে সংগ্রহ করা অর্থায়নের অন্যতম কাজ ।
মূলধন বাজেটিং:Capital Budgeting
মূলধন বাজেট সিদ্ধান্ত ঐ সকল প্রকল্প নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত যে গুলো থেকে ভবিষ্যতে বেশ কয়েক বছর আয় আসতে থাকবে । এক্ষেত্রে ঐ প্রকল্পের জন্য কী পরিমাণ মূলধন প্রয়োজন, প্রকল্পের কার্যকাল, ঐ প্রকল্প থেকে ভবিষ্যতে প্রত্যাশিত আয়, আয়ের ঝুঁকি প্রভৃতি বিষযে বিবেচনা ও ম্যল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয় । একটি কোম্পানির সম্পদ ও আকার প্রবৃদ্ধি, তথা মালিকের সম্পদ বৃদ্ধি বহুলাংশে নির্ভর করে মূলধন বাজেটিং সিদ্ধান্তে ওপর ।
স্বল্পমেয়াদি সম্পদ ব্যবস্থাপনাঃ Short Term Asset Management
স্বল্পমেয়াদি সম্পদের দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহারের মাধ্যমে আর্থিক ব্যবস্থাপনার সঠিক গ্রয়োগ করা হয় । সাধারণত ১ বছর বা তার কম সময়ের বিনিয়োগকে স্বল্পমেয়াদি বা চলতি মূলধন ব্যবস্থাপনা বলে । বেশি অর্থ বিনিয়োগ করলে তারল্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে । অনুরূপভাবে কম অর্থ বিনিয়োগ করলে মুনাফা কমে যেতে পারে । এ জন্য লভ্যাংশ ক্ষমতা এবং তারল্যের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে বিনিয়োগ করা উচিত ।
তহবিল বণ্টনঃ Fund Distribution
ভবিষ্যতে সর্বাধিক মুনাফা পাওয়ার মতো বিভিন্ন প্রকল্পে সংগৃহীত তহবিলের বণ্টন করাও অর্থায়নের কাজ । এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ প্রকল্প সমূহে খরচ ও আয় বিশ্লেষণ করতে হয় । তাই এ ক্ষেত্রে প্রথম ও প্রধান কাজ সেই সব প্রকল্প চিহ্ণিতকরণ যে সব প্রকল্পে আয়, ব্যয় অপেক্ষা বেশি । এবং দ্বিতীয় কাজ এই প্রকল্প হতে সর্বাধিক মুনাফা প্রদানকারী প্রকল্প জেছে নেওয়া এবং সেখানে বিনিয়োগ করা ।
তহবিল সংরক্ষণঃ Fund Saving
বিনিয়োগকৃত অর্থ হতে প্রাপ্ত মুনাফা পুনঃব্যবহার ও ভোগের মধ্যে সমন্বয়সাধন করাও অর্থায়নের অন্যতম কাজ । অর্থাৎ অর্জিত মুনাফার কত অংশ ব্যবসায়ে পুনঃবিনিয়োগের জন্য রেখে দেওয়া হবে এবং কত অংশ মালিক বা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বণ্টন করা হবে সে ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ও বাস্তবায়ন করা ।
মুনাফা বণ্টনঃ Profit Sharing
পরিকল্পিত ও গৃহীত প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমে কোম্পানির যে মুনাফা অর্জন করে, সেই মুনাফা শেয়ার মালিকদের মধ্যে বণ্টনের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আর্থিক ব্যবস্থাপককে নিতে হয় । অর্থাৎ অর্জিত মুনাফার কী পরিমাণ বা কত অংশ শেয়ার মালিকেদের মধ্যে বণ্টন করা হবে, তা ঠিক করে নিতে হয় । কোম্পানির শেয়ার মালিকদের লভ্যাংশের ব্যাপারে প্রত্যাশা ও ভবিষ্যতে বিনিয়োগের সুযোগ সম্বন্ধে চিন্তাভাবনা করে অর্জিত মুনাফার যে অংশ মালিকদের মধ্যে বিতরণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয় তাকে মুনাফা বন্টন হার বলা হয় ।
0 Comments
Thank you for commenting